COMPLETE CARE OF PLANTS

WELCOME TO OUR BLOG
  • GO THOUGH OR WHATSAPP CATALOG

    You can get here PLANT AND OTHER PRODUCT PRICE ...

  • GO THOUGH OR FACEBOOK GROUP

    You can get here latest update of product with price...

  • GO THOUGH OR YOUTUBE CHANEL

    You can get here plant caring videos...

October 24, 2023

টবে গোলাপের চাষ

টবে গোলাপের চাষ

  • টবের মাটি তৈরি : টবের মাটি দুভাবে তৈরি করা চলে। প্রথমতঃ ১০ ইঞ্চি টবের জন্য ৩ ভাগ মাটি, এক ভাগ গোবর সার, স্টেরামিল অথবা হাড়ের গুঁড়ো ৫ চামচ ইত্যাদির মিশ্রণ।  দ্বিতীয় পদ্ধতির জন্য প্রয়োজন ৩ ভাগ পাতাপচা সার, মোটা বালি অর্ধেক ইত্যাদির মিশ্রণ।

এইভাবে প্রস্তুত মাটি বালি চালা চালুনি দিয়ে ভালভাবে চেলে নিতে হবে। তারপর প্রতি টবের পরিমাণ মত মাটির সঙ্গে এক চামচ করে শিং গুঁড়ো, চামড়া গুঁড়ো, পটাশিয়াম সালফেট, সরষের খোল ও চুন এবং হাড় গুঁড়ো দুই চামচ মিশিয়ে টবে মাটি ভর্তি করতে হবে।

টবের মাটি যেন ওপরের কিনারা থেকে অন্ততঃ ২ ইঞ্চি নিচে থাকে। টবের মাথায় মাথায় উঁচু করে মাটি ভরা চলবে না। মাটি ভর্তি টবে গাছ লাগাবার জন্য একমাস অপেক্ষা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে একবার জল দিয়ে টবে মাটি উল্টে পাল্টে দিয়ে রোদ খাওয়াতে হবে।

মাটি ভর্তি করবার আগে নতুন টবটিকে ভালভাবে শোধন করে নেবার দরকার হয়।

টবটিকে পরিষ্কার করে ধুয়ে কমপক্ষে ১০ মিনিট ফুটন্ত জলে এক ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখতে হবে।

তারপর ভাঙ্গা খুরি বা টবের ছোট টুকরো দিয়ে টবের নিচের ছিদ্রটি এমনভাবে ক দিতে হবে যেন ফাঁক দিয়ে জল নির্গমনের সুবিধা থাকে। নিচের ছিদ্রটি ঢেকে দেবার পরে টবে প্রথমে দিতে হবে ২-৩ সেমি উঁচু করে কাঠকয়লার টুকরোর স্তর। এবার তৈরি করা মাটি দিয়ে টবটি ভর্তি করতে হবে। মাটি ভর্তি করার আগে আধ চামচ তুঁতে গুঁড়ো, এক চামচ ফিউরাডন (FURADON) দানা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে।

  • প্রাসঙ্গিক সর্তকতা

টবে বসাতে গেলে উন্নত জাতের গোলাপের চারা নির্বাচন করা উচিত।

সখের পুষ্পপ্রেমী ও ব্যবসায়ীদের জন্য টবে বসাবার উপযোগী কয়েকটি গোলাপের নির্বাচিত জাত হল— মন্টেজুমা, লরা, আই ন্যাচার, জিন গজার্ড, কনফিডেন্স, বিশ্বরো, প্যারাডাইস, শবনম,রোজ পিনোচ্চি ও ইভনিস্টোর প্রভৃতি। যারা প্রথম টবে গোলাপের চাষ করবেন তাদের পক্ষে উৎসাহ বৃদ্ধির জন্য হাইব্রিড টি লাল অথবা ফ্লোরিডা এই দুটি জাত বিশেষ উপযোগী। এসব গাছ চাষ করা সহজ। এগুলো অল্প সময়ে মাটিতে লেগে যায়, রোগ প্রতিরোধক্ষম এবং ফুলের সংখ্যা বেশি।

টবে গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময় বর্ষার শেষে অর্থাৎ ভাদ্র-আশ্বিন মাস। মাঘ-ফাল্গুনে লাগালেও উপযুক্ত পরিচর্যা দিয়ে গাছ বড় করা যায়।

নির্ভরযোগ্য নামী প্রতিষ্ঠান থেকে কলম কেনা উচিত। তাহলে ঠকবার ভয় থাকবে না। চারার গোড়ায় শেকড় জড়িয়ে যে মাটির মূলটি থাকে, কেনার সময় সেটি নিখুঁত আছে কিনা দেখে নিতে হবে।

গুল ক্ষতবিক্ষত বা ভাঙ্গা থাকলে বুঝতে হবে গুলের ভেতরের গাছের শেকড়গুলি অক্ষত নেই। ওরকম কলম গাছ বর্জন করতে হবে। চারায় ফুল ও কুঁড়ি থাকতে পারে। থাকলে তা ভেঙ্গে দিতে হবে এবং গাছের অধিকাংশ পাতাও ছিঁড়ে দিতে হবে। কিনে আনা গাছগুলিকে ছায়াচ্ছন্ন জায়গায় খবরের কাগজ জড়িয়ে ২-৩ দিন রেখে দিতে হবে। চারার শিকড়ের শুলটি সব সময় রসযুক্ত রাখতে হবে। প্রয়োজনে হাল্কাভাবে জল ছিটিয়ে দেওয়া দরকার। এভাবে ছায়াতে রাখা গাছগুলি নির্দিষ্ট সময়ে তুলে মূলসমেত টবের মাটিতে মধ্যস্থলে বসাতে হবে। টবে লাগাবার সময় যদি দেখা যায় গুলটি বেশ ভিজা রয়েছে তাহলে তখনই তা লাগানো যাবে না। তলটি অপেক্ষাকৃত শুকনো করে নিয়ে টবে লাগাতে হবে। চারা বসাবার সময় খেয়াল রাখতে হবে, কলমে জোড়ালাগা জায়গাটা যেন মাটির সমতলে থাকে।

টবের মাঝখানে সোজা করে চারা লাগাবার পরে এক সেমি পুরু করে সার মাটি গোড়ার চারপাশে ছড়িয়ে হাতের আলগা চাপে বসিয়ে দিতে হবে। গাছ লাগানোর পর টবের মাটি ভিজিয়ে জল দিতে হবে। ঠিক ঠিকভাবে জল দেওয়া হল কিনা তা সব সময় টবের মাটির ওপরের ভিজা অংশ দেখে বোঝা যায় না। ওপরের মাটি ভিজা থাকলেও টবের ভেতরের অংশে জল না পৌঁছাতেও পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জলের অভাবে গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য টবের গায়ে টোকা দিয়ে দেখতে হবে। ভেতরের অংশের মাটিতে জল না থাকলে টবের গায়ে টং টং শব্দ হবে। তখন জল দিতে হবে।

টবে গাছ লাগিয়ে কয়েকদিন আধছায়া জায়গায় রাখতে হবে। গাছে নতুন পাতা গজালে আবছায়া জায়গায় থেকে রোদ সহ্য করবার ক্ষমতা অর্জন করার সুযোগ পাবে।

গোলাপ চারা লাগানো টবটি সরাসরি মাটির ওপরে বসিয়ে রাখা চলবে না। এক ফালি কাঠের ওপরে অথবা ইটের ওপর পাটা পেতে তার ওপর টব বসানো চলবে। টবে গাছ বসাবার পর মাসে দুইবার দুই চামচ ফ্লোরাভিটা সার অথবা aries marino gold প্রয়োগ করতে হবে।

একমাস পূর্ণ হবার আগেই যদি গাছে নতুন পাতা উকি দিতে দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে বৃদ্ধির কাজ সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে।

সেই ক্ষেত্রে উপরোক্ত সার এক চামচ দিলেই যথেষ্ট। যদি নতুন পাতা গজাতে একমাসের বেশি সময় নেয় তাহলে ওই সারটি দুইবার প্রয়োগ করতে হবে। মোটকথা, গাছের বৃদ্ধির মাত্রার দিকে লক্ষ্য রেখে সারের মাত্রা ও সময়ের ব্যবধান ঠিক করতে হবে।

সার দেবার আগে টবের মাটি সাবধানে সামান্য খুঁড়ে তারপর মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। সার দেবার পর জল দেওয়া আবশ্যক।

ফুল আসার আগে পর্যন্ত এভাবে সার দিয়ে গেলে টবের গাছে আশানুরূপ ফুল পাবার সম্ভাবনা থাকে।

কুঁড়ি ধরার মুখে পচাপাতা, নিমখোল, গোবর বা ভার্মিকম্পোস্ট প্রয়োগ করার দরকার।

তিনটি উপকরণ সমপরিমাণ নিয়ে প্রয়োগের অন্ততঃ সাতদিন আগে জলে ভিজিয়ে পচাতে হবে। এই পচানো সার জল মিশিয়ে তরল করে কুঁড়ি বেরুবার মুখে মুখে প্রতি গাছে সাধারণ মাপের চায়ের কাপে এক কাপ করে দিতে হবে।

এই তরল সার ফুলের আকৃতি বড় করতে ও ফুলের রং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। গাছ লাগাবার দুই সপ্তাহ পরে এক চামচ চুন আধ লিটার জলে গুলে হেঁকে নিয়ে দিয়ে নিতে হবে। এভাবে তিন মাস অন্তর একবার করে চুনজল প্রয়োগ করতে হবে। তবে চুনজল দেবার পনেরো দিনের মধ্যে কোন সার দেওয়া চলবে না। ছোট টবে গাছ বসানো হলে ৬ মাস পরে গাছ একটু বড় হলে অপেক্ষাকৃত বড় গাটিকে স্থানান্তরিত করা দরকার।

প্রথমে ৮ বা ১০ ইঞ্চি ব্যাসের টব ব্যবহার করা হলে পরবর্তী সময়ে ১২ ইঞ্চি ব্যাসের টব গাছের বৃদ্ধির আনুপাতিক হারে ব্যবহার করতে হবে।

  • টব পাল্টানো

গাছের টব পাল্টাতে হবে খুব সাবধানে। টবটিকে প্রথমে বাঁ হাতের তালুতে রেখে ডান হাতের তর্জনী ও মধ্যমা আঙুলের সাহায্যে গাছের কান্ডের দিকটা শক্ত করে ধরতে হবে। তারপর একটি টুলের একপাশে টবের কানাটাকে আস্তে আস্তে দু-চারবার ঠুকতে হবে। তাহলেই মাটিসুদ্ধ গাছ ডান হাতে উঠে আসবে।

এভাবে গাছের ৪-৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি বছর একবার করে টব পাল্টাতে হবে। টব থেকে তুলে গাছের গোড়ার চারদিকের ও নিচের অংশের কিছু মাটি ঝরিয়ে দিতে হবে। বাড়তি শিকড় শোধন করা কাঁচি দিয়ে ছেটে ফেলে গাছের গোড়ায় ওপরের দিকের কিছু মাটিও তুলে ফেলে গাছটিকে টবে বসিয়ে দিতে হবে। পরে পাতা পচা ও গোবর সারের চেলে নেওয়া মিশ্রণ দিয়ে টব ভর্তি করে দিতে হবে। পরের টবের মাটি হাত দিয়ে হাল্কাভাবে চেপে বসিয়ে দিয়ে জল দিতে হবে।

টব পাল্টাবার কাজটা বিকেলের দিকেই করা উচিত। নতুন টবে বসানো গাছ শোধন করা ছুরি দিয়ে হাল্কাভাবে ছেটে দেওয়া দরকার।

নতুন ডাল ২-৩ ইঞ্চি লম্বা হলে গাছের গোড়ায়  রোজ মিকশ্চার অথবা ২০০ গ্রাম নিম খোল, এক চামচ সিঙ্গল সুপার ফসফেট, এক চামচ সালফেট অব পটাশ, আধচামচ সালফেট অব এমোনিয়া, আধ চামচ ম্যাগনেসিয়াম সালফেট একসঙ্গে মিশিয়ে প্রতি টবে দিতে হবে।

টবের গাছের বয়স দুবছর হলে প্রকৃতভাবে ডাল ছাঁটাইয়ের দরকার হয়। ডাল ছাঁটাইয়ের কাজে ব্যবহারের আগে কাঁচি বা ছুরি স্পিরিট দিয়ে মুছে বা ব্লাইটক্স গোলা জল দিয়ে শোধন করে নেওয়া উচিত।

আশ্বিন-কার্তিক মাসই ডাল ছাঁটাইয়ের উপযুক্ত সময়। ডাল ৮-১০ ইঞ্চি লম্বা রেখে বাকি অংশ ছেঁটে ফেলতে হবে। ডাল ছাঁটার সময় ডাল ছিঁড়ে বা থেঁতলে যাবার আশঙ্কা থাকে। তাই গাটের চোখের ঠিক উল্টো দিকে ডাল একটু হেলিয়ে ছাঁটতে হবে।

ছাঁটাইয়ের পরে জলে ব্লাইটক্স গুলে মলম তৈরি করে ডালের কাটা অংশে লাগিয়ে দিলে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে না।

অনেক সময় টবের অতিরিক্ত জল ঠিকভাবে বেরিয়ে যেতে না পারলে টবে জলবসা সমস্যা দেখা দেয়। টবে জল বসে থাকলে গোড়া পঁচে গাছ নষ্ট হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে টব থেকে মাটি সমেত গাছটিকে বের করে এনে কয়েকদিন ছায়ায় রাখতে হবে। টবে যে খোলামকুচি দেওয়া হয়েছিল সেগুলির অবস্থানজনিত পরিবর্ধনের ফলেই জল নিঃসরণের কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই পুরানো খোলামকুচি টব থেকে সরিয়ে নিয়ে নতুন করে টবের ছিদ্রের ওপরে কিছু বিছিয়ে দিতে হবে। আর ছায়ায় রাখা গাছের মাটি শুকিয়ে গেলে সেটি আবার টবের ভেতরে ঠিকভাবে বসিয়ে দিতে হবে।

গাছে ফুল ধরার সময় হলে পাতায় তরল সার স্প্রে করা উচিত। তাতে পাতা ও ফুলের রঙে উজ্জ্বল্য বাড়বে। তরল সার তৈরি করতে হবে দুই গ্রাম ইউরিয়া, দুই গ্রাম ম্যাগনেসিয়াম সালফেট ও এক গ্রাম ফেরাস সালফেট এক লিটার জলের সঙ্গে মিশিয়ে। এই সার গাছের পাতার এপিঠ ওপিঠে স্প্রে করতে হবে।

  • বিশেষ পরিচর্যা

(১) টবের গাছ গ্রীষ্মকালে বেলা ১২টা পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে রোদ পড়ে এমন জায়গায় রেখে রোদ খাওয়াতে হবে। 

(২) শীতকালে টবের গাছ বেলা ৩টা পর্যন্ত রোদে রাখা চলবে।

(৩) বর্ষার বৃষ্টিতে টবের মাটি ধুয়ে গেলে পুনরায় টবে সার মাটি দিতে হবে।

(৪) গাছ থেকে ফুল নিতে হলে ডাটাসহ কেটে নিতে হবে।

(৫) গাছে ফুল ঝরে গেলে বোঁটা কেটে ফেলতে হবে।

(৬) টবের মাটিতে ফাটল দেখা দিলে চেলে নেওয়া গোবর সার দিয়ে ফাটল ভরাট করতে হবে।

(৭) টবের গাছে ফ্যানের হাওয়া লাগানো চলবে না।

  • টবের গোলাপ গাছের রোগ ও পোকা

আঁশ পোকা ডাল পাতার গায়ে মাছের আঁশের মতো সাদাটে দাগ দেখা যায়। কাঠি দিয়ে খুঁটলে সাদাটে আন্তরণটি উঠে আসে। আঁশ পোকা ডাল ও পাতার রস শুষে খায়। গাছ ক্রমশ দুর্বল হয়ে মারা পড়ে। 
প্রতিকার : এক লিটার জলে আধমিলি রোগর মিশিয়ে ১০ দিন অন্তর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে। তাছাড়া ডাল ও পাতার গায়ের আঁশ তুলে ফেলতে হবে। কাঠিতে তুলো জড়িয়ে মেথিলেটেড স্পিরিটে ভিজিয়ে ঘষলে ডাল ও পাতার আঁশ উঠে যাবে।

ডগা-পচা রোগ :বাড়ন্ত গাছে এই রোগ বেশি দেখা যায়। গাছের ডগা হঠাৎ করে কালো হয়ে যায়। সে ডাল থেকে নতুন পাতা বেরনো বন্ধ হয়ে যায়। কখনো ডালের ডগার পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে। সাধারণতঃ টবের মাটিতে ফল বসে গেলে এমন হয়। 
প্রতিকার :  মাটি, জল নিঃসরণের ছিদ্রগুলি পরিষ্কার করে দেবার দরকার, তাছাড়া টবের মাটি ভেজা থাকলে জল দেওয়া বন্ধ রাখতে হয়। প্রতি আধ লিটার জলে দেড় গ্রাম নাইট্রেট অব সোডা গুলে টবের মাটিতে স্প্রে করতে হবে।

ছিটে রোগগোলাপ পাতার ওপরে গোলাকার কালো দাগ পড়ে। আক্রান্ত পাতা ঝরে যেতে থাকে। 

প্রতিকারপ্রতি লিটার জলে একগ্রাম ব্লাইটক্স বা ব্যাভিস্টিন গুলে ১০ দিন অন্তর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে।

ডাইব্যাকভাল ছাঁটাইয়ের পরে গজানো নতুন ডালে রোগ দেখা যায়। আক্রান্ত ডালের একটি দিক বাদামী রং ধরে নিচের দিকে শুকিয়ে যেতে থাকে। ডালের পাতা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। রোগটি এমনই মারাত্মক যে ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে রোগাক্রান্ত গাছটি ঝিমিয়ে পড়ে।

প্রতিকাররোগাক্রান্ত অংশ কেটে ফেলতে হবে। কাটা অংশে ব্লাইটক্স এর প্রলেপ লাগাতে হবে।

তাছাড়া বর্ষার আগে গাছের গোড়ায় নিমখোল ও স্টেরামিল নির্দিষ্ট মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

পাউডারি রোগপাতার ওপর পাউডারের মতো সাদাটে গুঁড়ো জমে। পাতা ওপরের দিকে কুঁকড়ে যায়। কুঁড়ি ফুলে পরিণত হওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

প্রতিকার : প্রতি লিটার জলে একগ্রাম ব্যাভিস্টিন আধ মিলি রোগোর মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করতে হবে।

জাব পোকাসুবজ বা কালো রঙের ক্ষুদ্রাকার পোকা নরম ডাল, পাতা ও কুঁড়ির রস চুষে খায়। আক্রমণ মারাত্মক হলে গাছ মরে যায়।

প্রতিকারপ্রতি লিটার জলে ১ মিলি ডিমেক্রন গুলে গাছে স্প্রে করতে হবে। উইপোকা-পিঁপড়ে ইত্যাদি দমন হবে।

টবের প্রতি টবে ২ গ্রাম ফিউরাডন ও ২ গ্রাম বি.এইচ.সি (Benzene hexachloride) ১০ শতাংশ গুঁড়ো মিশিয়ে ছড়িয়ে দিলে পিঁপড়ে উইপোকার দমন হবে। এছাড়া গাছে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিদিন বিকালে প্রতি লিটার জলে পাঁচ ফোটা কনফিডোর মিশিয়ে গাছে ভালভাবে স্প্রে করা উচিত।



June 9, 2023

Rose Care মাস অনুযায়ী গোলাপের পরিচর্যা

Rose Care মাস অনুযায়ী গোলাপের পরিচর্যা

🌹গোলাপ গাছ অতি সৌখিন একটি গাছ যাকে প্রতি মাসে আলাদা ভাবে কেয়ার না করলে গাছে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং গাছের চেহারা স্বাস্থ্য ভালো হয় না এবং শীতকালে ফুল বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় না বা ফুলের চেহারা ভালো হয় না। তাই, বছরে প্রতিমাসে কিভাবে এই গাছের পরিচর্যা করতে হয় তা এই অংশের মূল আলোচনার বিষয়বস্তু।

জানুয়ারি মাসের পরিচর্যা : জানুয়ারি মাসে গোলাপ গাছে খাবার দিতে হবে একবার : ১০০ গ্রাম কাঁচা গোবর ১ লিটার জলে মিশিয়ে ১৫ দিন পাত্রের মুখ ঢেকে রাখতে হবে। ১৬তম দিনে পুরোটা ছেঁকে নিয়ে তার সাথে জল মেশাতে হবে যতক্ষণ না লিকার-চা এর রং আসছে সেই পরিমাণ।
এর থেকে ৩ কাপ জল দিতে হবে প্রতি গাছের গোড়ায়। এই খাবার দেওয়ার আগের দিন গাছের মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে ভালো করে জল দিয়ে। 
এই মাসে কিছু জিনিস স্প্রে করতে হবে তা হলো : (১) পেস্টিসাইড : টাফগর বা রগড় ১ লিটার জলে ৩০ ফোঁটা দিয়ে স্প্রে
টাফগর কিনতে এই লিংকে ক্লিক করুন : টাফগর কিনুন

এর ঠিক ৩ দিন পর
(২) যেকোনো গ্রোথ রেগুলেটর স্প্রে ( কিনতে এই লিংকে ক্লিক করুন : গ্রোথ রেগুলেটর কিনুন )
এর ঠিক ৩ দিন পর 
(৩) যেকোনো ফাঙ্গীসাইড স্প্রে
এবং এর তিন দিন পর
(৪) যেকোনো মাইক্রোনিউট্রিএন্টস স্প্রে ( মাইক্রোনিউট্রিএন্টস  কিনতে এই লিংকে ক্লিক করুন : মাইক্রোনিউট্রিএন্টস কিনুন )
এর পর আবার এর ৩ দিন পর এই রুটিন পুনরায় রিপিট করতে হবে। 
প্রতিবার পেস্টিসাইড ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দিতে হবে। (ক) টাফগর বা রগড়
(খ) কনফিডর ( কিনতে এই লিংকে ক্লিক করুন : কনফিডর কিনুন )
(গ) কাকা ( কিনতে এই লিংকে ক্লিক করুন : কাকা কিনুন )
(ঘ) থিটা ( থিটা কিনুন )
(ঙ) সুপার সোনাটা ( সুপার সোনাটা কিনুন )
এই পাঁচটি পেস্টিসাইড প্রতিবার এক একটা করে দিতে হবে অর্থাৎ প্রথমবার টাফগর দিলে পরের বার কনফিডর এভাবে।
প্রতি মাসে একবার  ফুরাডন ১ চা চামচ টবের মাটিতে ছড়িয়ে দিতে হবে। ( ফুরাডন কিনুন )
প্রতিদিন ( ওষুধ জাতীয় স্প্রে এর দিনগুলি বাদ দিয়ে ) সকালবেলা সূর্যের আলোর তেজ প্রখর হওয়ার আগে এবং সন্ধ্যা নামার মুখে জল দিয়ে সম্পূর্ণ গাছ স্প্রে করতে হবে এবং অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেনো জল বা ওষুধ কোনোটিই ফুলের গায়ে ন লাগে।
এইভাবে জানুয়ারি মাসে গাছের পরিচর্যা করতে হবে।

ফেব্রুয়ারি মাসের পরিচর্যা : এই মাসে জানুয়ারি মাসে খাবার দেওয়ার ঠিক ৩০ দিন পরে খাবার দিতে হবে : ডি এ পি ১/২ চা চামচ + সিঙ্গেল সুপার ফসফেট ১/২ চা চামচ + এস ও পি ১/২ চা চামচ ভালো করে মিশিয়ে প্রতি ১২ ইঞ্চি টবের ক্ষেত্রে এর থেকে ২ চা চামচ এবং ৮-১০ ইঞ্চির ক্ষেত্রে ১.৫ চা চামচ মাটিতে ছড়িয়ে দিতে হবে। খাবার দেওয়ার আগেরদিন মাটি ভিজিয়ে রাখতে হবে, পরেরদিন মাটি খুসে নিয়ে সার দিয়ে জল দিতে হবে।
ডি এ পি কিনুন )
সিঙ্গেল সুপার ফসফেট কিনুন )
এস ও পি কিনুন )
স্প্রে জানুয়ারি মাসের মতই চলবে।
ফুলের ভারে ডাল নুইয়ে পড়লে এবং ফুল পুরনো হয়ে গেলে ৩ পাতার নিচ থেকে এবং ৫ পাতার ওপর থেকে ৪৫⁰ কোণ করে কেটে দিতে হবে।

মার্চ মাসের পরিচর্যা : এই মাসে ফেব্রুয়ারি মাসে খাবার দেওয়ার ঠিক ৩০ দিন পরে খাবার দিতে হবে : শিং চাছা ১/২ চা চামচ + ক্ষুর কুঁচি ১/২ চা চামচ + হাড় গুঁড়ো ১ চা চামচ + কাঠের ছাই ২.৫ চা চামচ মাটিতে ছড়িয়ে দিতে হবে। খাবার দেওয়ার আগেরদিন মাটি ভিজিয়ে রাখতে হবে, পরেরদিন মাটি খুসে নিয়ে সার দিয়ে জল দিতে হবে।
শিং চাছা কিনুন )
ক্ষুর কুঁচি কিনুন )
হাড় গুঁড়ো কিনুন ) /  ( STEAMED BONEMEAL কিনুন  ) 
স্প্রে চলবে একিরকম রুটিনে।
জল প্রতিদিন স্প্রে করতে হবে পাতার উপর নিচে, সন্ধ্যা ৭ টা এর পর ।
কাটাই : গাছ ঘন হয়ে গেলে পুরনো ডাল কেটে গাছকে ফাঁকা করতে হবে এবং কাটা জায়গায় সাফ ফাঙ্গীসাইড এর লেই করে লাগিয়ে দিতে হবে।
সূর্যালোক : এই সময় সকাল ১১ টা অবধি গাছকে রোদ খাইয়ে তারপর হালকা ছায়াতে গাছ রাখতে হবে।

April 11, 2023

Indoor Plant : Peace Lily পিস লিলি এর সম্পূর্ণ পরিচর্যা

পিস লিলি, একটি জনপ্রিয় ইনডোর প্লান্ট। এই গাছ ঘরের দূষিত বায়ু গ্রহণ করে বিশুদ্ধ বায়ু দেয় এবং নাসার বিজ্ঞানীদের মত অনুসারে এটি সবথেকে কার্যকরী বায়ু পরিশোধনকারি গাছ। আসুন জেনে নি কিভাবে এই গাছের পরিচর্যা করতে হয় ?

মাটি : (১)  বাগানের সাধারণ মাটি ২ ভাগ + নদীর সাদা বালি ১ ভাগ + ভার্মি কম্পোস্ট ১ ভাগ + ১/২ ভাগ কোকোপিট
(২) হলুদ বালি ১ ভাগ + ভার্মি কম্পোস্ট ১ ভাগ

টব : ছোটো ঘরের জন্যে ৮ ইঞ্চি, বড়ো ঘরের জন্যে ১২ ইঞ্চি টব উপযুক্ত। সম্ভব হলে মাটির টব ব্যবহার করুন, এতে গাছ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবে এবং সুস্থ থাকবে।

কোথায় রাখা উচিত : উজ্জ্বল সূর্যের আলো আসে, কিন্তু সরাসরি সূর্যের আলো গাছে লাগবে না এবং যথেষ্ট পরিমাণ বায়ু চলাচল করে,  এমন জায়গায় এই গাছ রাখা যাবে।

জল : মাটি একেবারে শুকিয়ে গিয়ে ঝিমিয়ে পড়লে তখন ভরপুর জল দিতে হবে। মাটিতে কোকোপিট দিলে ওপরের মাটি শুকিয়ে গেছে মনে হলেও ভিতরের মাটি ভেজা থাকে। তাই একটা লম্বা কাঠি ঢুকিয়ে ভিতরটা ভেজা আছে নাকি দেখে , ভেজা না থাকলে তবেই জল দিতে হবে। 
প্রতিদিন স্প্রে করে শুধু গাছের পাতা ভিজিয়ে দিল ভালো হয় বিশেষ করে গরমকালে।

খাবার : এই গাছ মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রচুর ফুল দেয়। তাই ফেব্রুয়ারি তে একবার এবং সেপ্টেম্বরে একবার খাবার দিতে হবে। এন পি কে ২০-২০-২০ ফেব্রুয়ারি মাসে একবার এবং সেপ্টেম্বর মাসে একবার ৮ ইঞ্চি টবের জন্যে ১ চা চামচ এবং ১০-১২ ইঞ্চির জন্যে ২ চা চামচ দিতে হবে । 
মাসে একবার সি উইড স্প্রে করলে খুব ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে ।

এই গাছের রোগ পোকা  :
এই গাছে পোকার আক্রমণ ৯৯% হয়না। যারা বাগানে এই গাছ করে তাদের ক্ষেত্রে অন্যান্য গাছ থেকে এই গাছ এ পোকার আক্রমণ হয়, তাই ১৫-২০ দিন এ একবার রগোর ১ লিটার জল এ ৩০ ফোঁটা দিয়ে স্প্রে করতে হবে সন্ধ্যা ৭ টার পর(শুধু মাত্র বাইরে বাগান এ যারা রাখে )
ঘর এর গাছ এর পাতায় যখন ধুলো পড়বে একটি পাতলা ন্যাকরা জল এ ভিজিয়ে পাতা আলতো করে মুছে দিলে আর কোনো পোকার আক্রমণ হবে না। 

***** এই গাছ ,সার এবং কীটনাশক কিনতে চাইলে যোগাযোগ করুন SIMPLE PLANT SOLUTION ৮২৯৬৫৯০৬৬৩ নম্বরে *****



April 6, 2023

How to Grow and Care for Peperomia Plants Indoors কীভাবে বাড়ির ভিতরে পেপেরোমিয়া উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং যত্ন নেওয়া যায়

 পেপেরোমিয়া উদ্ভিদগুলি মেক্সিকো, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের গ্রীষ্মমন্ডলীয় উদ্ভিদের একটি বিস্ময়কর বংশের অন্তর্গত। 1,000 টিরও বেশি পরিচিত প্রজাতির সাথে, এই গাছগুলি ঘন, মাংসল পাতা নিয়ে গর্ব করে যা তাদের খরা সহনশীলতা এবং শক্তিতে অবদান রাখে। Peperomia উদ্ভিদ নতুনদের জন্য একটি ভাল পছন্দ 


সাধারণ নাম Baby rubber plant, pepper elder, radiator plant, shining bush plant, emerald ripper pepper

Botanical NamePeperomia spp. (including P. caperataP. obtusifolia, and others)

উদ্ভিদের ধরনবহুবর্ষজীবী, এপিফাইট

পরিপক্ক আকার : 6-12 ইঞ্চি লম্বা, 6-12 ইঞ্চি চওড়া

সূর্যালোকের প্রয়োজন : আংশিক (semi shade)

মাটির ধরন : আর্দ্র কিন্তু ভাল-নিষ্কাশিত (moist but well-drained)

মাটির pHNeutral to acidic

এখন উদ্ভিদের যত্ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক :

মাটিপর্যাপ্ত নিষ্কাশন গর্ত সহ একটি পাত্রে পেপেরোমিয়া রোপণ করুন, একটি অর্কিড পটিং মিশ্রণ বা নিয়মিত পটিং মাটি ব্যবহার করে (ভার্মি কম্পোস্ট 50% + হলুদ বালি 50%), তারপর গাছটিকে উজ্জ্বল পরোক্ষ আলোতে রাখুন। আপনি সর্বদা এক মুঠো পিট মস বা ভার্মিকুলাইট দিয়ে এটি হালকা করতে পারেন।

আলো : পেপেরোমিয়া গাছের পাতার রঙ বজায় রাখার জন্য মাঝারি থেকে উজ্জ্বল আলোর প্রয়োজন। অপর্যাপ্ত আলোর ফলে পাতা কম হবে, পাতা ঝরে যাবে এবং রঙ্গিন হবে। সরাসরি সূর্যের রশ্মি এড়ানো উচিত, কারণ তারা পাতা পুড়িয়ে ফেলতে পারে।

জল : পেপেরোমিয়াতে রসালো পাতা রয়েছে যা ইঙ্গিত দেয় যে এই উদ্ভিদের শক্তি বজায় রাখার জন্য ঘন ঘন জল দেওয়ার প্রয়োজন নেই। জল দেওয়ার মধ্যে মাটির পৃষ্ঠকে শুকিয়ে যেতে দিন।  ভেজা মাটিতে শিকড় পচা রোগ হতে পারে।

তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা : গ্রীষ্মমন্ডলীয় উদ্ভিদ হিসাবে, পেপেরোমিয়া উদ্ভিদ একটি উষ্ণ এবং বাষ্পীয় পরিবেশ পছন্দ করে, বিশেষ করে গ্রীষ্মের মাসগুলিতে যখন তাদের বৃদ্ধি সবচেয়ে সক্রিয় হয়। আর্দ্রতা বাড়ানোর জন্য নুড়ি এবং জলের একটি ট্রেতে এটি রাখুন, বা কাছাকাছি রাখার জন্য একটি ছোট আকারের হিউমিডিফায়ারে বিনিয়োগ করুন।

সার পেপেরোমিয়াকে এন পি কে 19-19-19 বা 20-20-20 এই ওয়াটার সলিউবল সার ১ লিটার জল এ ১ চা চামচ মিশিয়ে তার থেকে ২৫০ মিলি গাছের মাটিতে দিতে হবে। এই প্রজাতিটি ভালভাবে বৃদ্ধি পাবে যদি সারে ক্যালসিয়ামের মতো অন্যান্য খনিজও থাকে। এই গাছের প্রচুর পরিমাণে সারের প্রয়োজন হয় না, তাই গ্রীষ্মের বৃদ্ধির মরসুমে একবার বা দুবার খাওয়ানো যথেষ্ট।

Pruning : বসন্তের শুরুতে পেপেরোমিয়া গাছগুলিকে হালকাভাবে ছাঁটাই করুন। প্রতিটি কান্ডের শেষ এবং পাতার প্রথম সেট সরান; আপনি আপনার আঙ্গুল দিয়ে তাদের pinching করতে পারেন

Peperomia সঙ্গে সাধারণ সমস্যা : পেপেরোমিয়া হল একটি কম রক্ষণাবেক্ষণকারী উদ্ভিদ যার বেশি জলের প্রয়োজন হয় না। একবার আপনি একটি মাঝারি থেকে উজ্জ্বল আলোর অবস্থান শনাক্ত করুন এবং একবার মাটি পরীক্ষা করার কথা মনে রাখবেন। এখানে কিছু লক্ষণ রয়েছে যে আপনার উদ্ভিদকে কিছু অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হতে পারে।

পাতা কুঁচকানো এবং হলুদ : বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, যখন পেপেরোমিয়া পাতা হলুদ হয়ে যায় বা কুঁচকানো শুরু করে, এর মানে এটি খুব বেশি জল পাচ্ছে। হলুদ পাতাগুলি কেটে ফেলুন

বিকৃত পাতা : বিকৃত পাতা দেখলে রিং স্পট নির্ণয় করা যেতে পারে। বিকৃত পাতাগুলো তুলে ফেলুন ।


***** এই গাছ, সার এবং কীটনাশক কিনতে চাইলে যোগাযোগ করুন SIMPLE PLANT SOLUTION ৮২৯৬৫৯০৬৬৩ নম্বরে ***** 



February 27, 2023

জমিতে আম চাষের সম্পূর্ণ পরিচর্যা

 জমিতে আম চাষের সম্পূর্ণ পরিচর্যা



আম সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং উপাদেয় ফল। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ’এ’ থাকে। আম থেকে চাটনি, আচার, জেলী, মোরব্বা, আমসত্ব, জুস প্রভৃতি তৈরী করা যায়।

জলবায়ু ও মাটি : 

২০ থেকে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা আম চাষের জন্য উপযুক্ত। আম গাছ যে কোন প্রকার মাটিতে জন্মায় তবে গভীর, সুনিষ্কাশিত উর্বর দোঁ-আশ মাটি আম চাষের জন্য উপযুক্ত ।

জাত :
আম পাকার সময় অনুসারে আমের জাত সমুহকে আগাম, মাঝ মৌসুমী এবং নাবি এ তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।

  • আগাম জাত : যে সব জাত মধ্য মে – মধ্য জুন মাসের মধ্যে পাকে সেগুলো আগাম জাতের অর্ন্তভূক্ত। যেমন- বারি আম-১ (মহানন্দা), গোপালভোগ, খিরসাপাতি, বৃন্দাবনী ইত্যাদি।
  • মাঝ মৌসুমী জাত : যে সব জাত মধ্য জুন – জুন মাসের মধ্যে পাকে সেগুলো মাঝ মৌসুমী জাতের অর্ন্তভূক্ত। যেমন- বারি আম-২ (লক্ষনভোগ), বারি আম-৩ (আম্রপালি), বাউ আম – ২ (সিন্দুরী), বাউ আম – ৩ (ডায়াবেটিক), ল্যাংড়া, সূর্যপুরী, হিমসাগর, কিষাণভোজ এবং কোহিতুর অন্যতম।
  • নাবী জাত : যে সকল জাত জুলাই মাস হতে পাকে সেগুলোকে নাবী জাত বলে। নাবী জাতের মধ্যে বারি আম-৪, বাউ আম -১ (নিলাম্বরী), বাউ আম – ৫ (পলিএ্যাম্বায়নী), ফজলী, আশ্বিনা, কুয়াপাহাড়ী এবং মোহনভোগ অন্যতম।

জমি নির্বাচন ও তৈরী :
আম বাগানের জন্য সেচ- নিষ্কাশন সুবিধা যুক্ত, রৌদ্রময় স্থানে উঁচু থেকে মাঝারী উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচিত জমিটিকে ভালভাবে চাষ মই দিয়ে আগাছা মুক্ত ও সমতল করে তৈরী করতে হবে। আম গাছ প্রধানত বর্গাকার পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়। তবে ষঢ়ভূজী বা হেক্সাগোণাল পদ্ধতিতে রোপণ করা গেলে সমপরিমান জমিতে ১৫% গাছ বেশী রোপণ করা যায়।

চারা রোপণের সময় :
জ্যৈষ্ঠ – আষাঢ় মাস এবং ভাদ্র – আশ্বিন মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময়

রোপণ দুবত্ব :
বড় আকৃতির জাতের জন্য ৮ -১০ মিটার এবং বামন আকৃতির জাতের জন্য ৫ মিটার দুরুত্ব দেয়া উত্তম।

জমি তৈরী ও সার প্রয়োগ :

জমি ১মি x ১মি x ১মি আকারে তৈরী করতে হবে। প্রতি জমিতে ১৮-২২ কেজি জৈব সার, ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৪৫০-৫৫০ গ্রাম ডিএপি বা টিএসপি, ২০০-৩০০ গ্রাম এমওপি, ২০০-৩০০ গ্রাম জিপসাম এবং ৪০-৬০ গ্রাম জিংক সালফেট সার মিশিয়ে তৈরী করতে হবে।

চারা রোপণ :
জমি তৈরীর ১০-১৫ দিন পর জমির ঠিক মাঝখানে চারাটি রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের পর জল, খুঁটি ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

উপরিসার প্রয়োগ :
গাছের বয়স অনুযায়ী নির্ধারিত মাত্রার সারকে সমান দুই বারে গাছে প্রয়োগ করা হয়। ১ম বার জৈষ্ঠ্য- আষাঢ় মাস এবং ২য় বার আশ্বিন মাসে প্রয়োগ করতে হবে। বয়স অনুযায়ী গাছের গোড়া থেকে ৩-৪ ফুট বাদ দিয়ে দুপুরের রোদের সময় যতটুকু জায়গায় গাছের ছায়া পড়ে ঠিক ততটুকু এলাকাতে সার ছিটিয়ে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। মাটি কোপানোর সময় হাতের কনুই গাছের দিকে দিয়ে কোপালে গাছের শিকড় কম কাটা যাবে। গাছের বয়স অনুযায়ী বাৎসরিক সারের মাত্রা নিচে দেওয়া হলো।


  • ০২-০৪ বছর বয়সী গাছের ক্ষেত্রে :  ১০-১৫ কেজি গোবর পঁচা সার, ইউরিয়া ২৫০ গ্রাম, টিএসপি ২৫০ গ্রাম, এমওপি ১০০ গ্রাম, জিপসাম ১০০ গ্রাম, জিংক সালফেট ১০ গ্রাম
  •  ০৫-০৭ বছর বয়সী গাছের ক্ষেত্রে : গোবর সার ১৬-২০ কেজি, ইউরিয়া ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ২৫০ গ্রাম, এমওপি ২০০ গ্রাম, জিপসাম ২০০ গ্রাম, জিংক সালফেট ১০ গ্রাম
  • ০৮-১০ বছর বয়সী গাছের ক্ষেত্রে : গোবর সার ২১-২৫ কেজি, ইউরিয়া ৭৫০ গ্রাম, টিএসপি ৫০০ গ্রাম, এমওপি ২৫০ গ্রাম, জিপসাম ২৫০ গ্রাম, জিংক সালফেট ১৫ গ্রাম
  •  ১১-১৫ বছর বয়সী গাছের ক্ষেত্রে : গোবর সার ২৬-৩০ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ৫০০ গ্রাম, এমওপি ৩৫০ গ্রাম, জিপসাম ৩৫০ গ্রাম, জিংক সালফেট ১৫ গ্রাম
  •  ১৬-২০ বছর বয়সী গাছের ক্ষেত্রে : গোবর সার ৩১-৪০ কেজি, ইউরিয়া ১কেজি ৫০০ গ্রাম, টিএসপি ৭৫০ গ্রাম, এমওপি ৪৫০ গ্রাম, জিপসাম ৪০০ গ্রাম, জিংক সালফেট ২০ গ্রাম
  •  ২০ বছরের উর্ধ্বে গাছের ক্ষেত্রে : গোবর সার ৪১-৫০ কেজি, ইউরিয়া ২কেজি, টিএসপি ১ কেজি, এমওপি ৫০০ গ্রাম, জিপসাম ৫০০ গ্রাম, জিংক সালফেট ২৫ গ্রাম

সেচ প্রয়োগ :
চারা গাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। ফলন্ত গাছের বেলায় মুকুল ফোটার শেষ পর্যায়ে ১ বার এবং আম যখন মটর দানার আকৃতি ধারন তখন একবার সেচ দিতে হবে। রিং / বেসিন পদ্ধতি আম গাছে সেচ প্রদানের জন্য উত্তম।

ডাল ছাঁটাইকরন :
গাছের প্রধান কান্ডটি যাতে সোজাসুজি ১ থেকে ১.৫ মিটার হয় সেদিকে লক্ষ রেখে গাছের গোড়ার সকল ডাল ছেঁটে দিতে হবে।

গাছের মুকুল ভাঙ্গন :

গাছ রোপনের পর গাছের বয়স চার বছর না হওয়া পর্যন্ত গাছের মুকুল ভেঙ্গে দিতে হবে। তা নাহলে গাছটি দুর্বল হয়ে যাবে।

ফল সংগ্রহ :
আমের বোটার দিকে হলুদাভ রং ধারন করলে বা গাছ হতে ২-১টি আধাপাকা আম পড়া আরম্ভ করলে আম গাছ হতে সংগ্রহ করতে হবে। আম গাছ হতে ঝাকি দিয়ে না পেড়ে জালিযুক্ত বাঁশের কোটার সাহায্যে আম সংগ্রহ করা ভালো। আম সংগ্রহের পর বোটাটি নিচের দিকে রাখলে বোটার কশ আমের গায়ে লাগবেনা। বোটার কশ গায়ে লাগলে আমের উপরিভাগ আঠালো হয়ে যায় এবং পাকা আমের উপর তেল ছিটছিটে এবং বাজার মূল্য হ্রাস পায় ।

রোগপোকার দমন :

  • আমের অ্যানথ্রাকনোজ রোগঃ
অ্যানথ্রাকনোজ রোগের আক্রমণে গাছের পাতা, কান্ড, মুকুল ও ফলে ধুসর বাদামী রংয়ের দাগ পড়ে। এ রোগে আক্রান্ত মুকুল ঝড়ে যায়, আমের গায়ে কালচে দাগ হয় এবং আম পঁচে যায়।

প্রতিকারঃ
গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে প্রতি লিটার জলে ০.৫ মি.লি. টিল্ট -২৫০ ইসি অথবা ডাইথেন এম-৪৫ 
 প্রতিলিটার জলে ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের আকার মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করতে হবে।

  • সুটি মোল্ডঃ
স্যটি মোল্ড রোগের আক্রমণে গাছের পাতা ও আমের উপর কালো/ছাই রংয়ের আবরণ পড়ে। গাছের মুকুল ঝড়ে যায় এবং ফলন কমে যায়।

প্রতিকারঃ
থিওভিট-৮০ ডব্লিউ জি প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ – ৩ বার স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায়।

  • আমের পাউডারী মিলডিউ রোগঃ
এ রোগের আক্রমণে আমের মুকুলে সাদা পাউডারের মত আবরণ দেখা দেয়। মুকুল ঝড়ে যায়। আক্রান্ত আমের চামড়া খস খসে হয় এবং ফল কুচকে যায়।

প্রতিকারঃ
থিওভিট-৮০ ডব্লিউ জি প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম হারে অথবা প্রতি লিটার জলে ০.৫ মি.লি. টিল্ট -২৫০ ইসি মিশিয়ে ফুল ফোটার আগে ১ বার এবং আম মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করলে এ রোগ দমন করা যায়।

  • ম্যালফরমেশনঃ
এ রোগ গাছের মুকুল ও ডালে দেখা যায়। ডালে হলে একে বলে অংগজ ম্যালফরমেশন এবং ফুলে হলে বলা হয় ফ্লোরাল ম্যালফরমেশন । আক্রান্ত ডালের বৃদ্ধি কমে যায় এবং আক্রান্ত মুকুলে ফল ধারণ করে না।
প্রতিকারঃ
১) কান্ডের অঙ্গজ ম্যালফরমেশন পরিস্কার করে বোর্দপেষ্ট (Bordeaux Paste) লাগালে এ রোগ প্রতিকার করা যায়।
২) ফ্লোরাল ম্যালফরমেশনের ক্ষেত্রে মুকুলের ৭৫% শাখা প্রশাখা পাতলা করে দিলে আক্রান্ত মুকুলে ফল ধারণ করে । দমনের জন্য আক্রান্ত মুকুল কেটে পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হবে। সেপ্টেম্বর ও নভেম্বর মাসে গাছে জিংক দ্রবন স্প্রে করলে ফ্লোরাল ম্যালফরমেশন প্রতিরোধ করা যায়।

  • লাল মরিচা রোগঃ
এতে পাতার উপর লাল লাল / ভ্যালভেট মোলায়েম দাগ দেখা যায়। ব্যাপক আক্রমণ হলে পুরো পত্র ফলকটি বিবর্ণ হয়ে যেতে পারে।

প্রতিকারঃ
১) বোর্দ মিক্সার (১ লিটার জলে ১০ গ্রাম চুন এবং অপর ১ লিটার জলে ১০ গ্রাম তুতে মিশিয়ে মিশ্রণটি একত্রিত করে বোর্দ মিক্সার তৈরী করতে হয়, এক্ষেত্রে মিশ্রণ গুলো মাটি অথবা প্লাস্টিক পাত্রে করতে হবে।) ১৫ দিন পর পর ২/৩ বার প্রয়োগ করলে এ রোগ প্রতিকার করা সম্ভব ।

পোকামাকড় দমন :

  • আমের হপার পোকাঃ
এ পোকা অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চা বা নিম্ফ এবং পুর্ণ বয়স্ক অবস্থায় আম গাছের সকল অংশ থেকে রস শুষে খায়। বিশেষ করে নিম্ফ মুকুলের রস শুষে খায়। মুকুল কালো হয় এবং ঝরে যায়।

প্রতিকারঃ
রিপকর্ড / সিমবুস প্রতিলিটার জলে ১ মিঃ লিঃ হারে মিশিয়ে ফুল আসার ১০ দিনের মধ্যে ১ম বার (গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে) এবং গাছে আম মটর দানার মত হলে ২য় বার স্প্রে করে এ পোকা দমন করা যায়।

  • আমের পাতা কাটা উইংভিলঃ
স্ত্রী পোকা আমের কটি পাতার নিচে মধ্য শিরা বরাবর ডিম পাড়ে। এবং পাতা গুলো বোটার কাছকাছি কেটে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে গাছের বৃদ্ধি মারত্মক ভাবে ব্যহত হয়।

প্রতিকারঃ
১) গাছের নিচের কাট পাতাগুলো সংগ্রহ করে পুড়িয়ে / মাটিতে পুতে ধ্বংস করতে হবে।
২) প্রয়োজনে গাছে কচি পাতা দেখা দিলে সুমিথিয়ন ৫০ ইসি / ডায়াজিনন ৬০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ২ মিঃলিঃ হারে মিশিয়ে স্প্রে করলে এ পোকা দমন করা যায়।

  • আমের মাছি পোকাঃ
আম পাকার প্রায় ১ মাস আগে স্ত্রী পোকা অভিপজিটর দিয়ে ছিদ্র করে আমের ভিতরে ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে কীড়া বা ম্যাগট বের হয় এবং আমের ভিতর বড় হতে থাকে। পাকা আম কাটলে ভিতবে পোকা দেখা যায়। আম খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

প্রতিকারঃ
১) পোকা আক্রান্ত ফল সংগ্রহ ও নষ্ট করে দমন করা যায়।
২) বিষটোপ ফাঁদ দিয়ে দমন করা যায়। বিষটোপ প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমের সাথে ১ গ্রাম ডিপ্টারেক্স-৮০ এসপি মিশিয়ে তৈরী করতে হয়।
৩) সেক্স ফেরোমন ইউজিনল ট্রাপ প্রয়োগ করে পুরুষ পোকা দমনের মাধ্যমেও এ পোকার আক্রমন প্রতিহত করা যায়। বাগানে ২০-২৫ মিটার পর পর এ ফাঁদ প্রয়োগ করতে হবে।

  • ভোমরা পোকাঃ
আমের ভোমরা পোকার কীড়া আমের গায়ে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শাঁস খায়। সাধারণত কচি আমে ছিদ্র করে এরা ভিতরে ঢুকে এবং ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্রটি বন্ধ করে দেয়। এজন্য বাহির থেকে আমটি ভাল মনে হলেও ভিতরে কীড়া থেকে যায় এবং দিনে দিনে তা বড় হয়। পাকা আমে গায়ে ছিদ্র করে ভিতর থেকো কালো রংয়ের উইভিল পোকাটি বের হয়ে আসে। ফলের ভিতর আক্রান্ত অংশটি কালো হয়ে যায়, পোকার বিষ্টা দেখা যায় এবং আম খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

প্রতিকারঃ
১) আম গাছের মরা ও অতিরিক্ত পাতা শাখা প্রশাখা কেটে পরিস্কার করতে হবে।
২) গাছে ফল ধারণের ১ থেকে ২ সপ্তাহের পর হতে ডায়েজিনন – ৬০ ইসি, সুমিথিয়ন – ৫০ ইসি, লিবাসিড – ৫০ ইসি এর যে কোন একটি প্রতি লিটার জলে ২ মি. লি. হারে মিশিয়ে ১৫ দিন অন্তর অন্তর ২বার স্প্রে করতে হবে।

  • আমের পাতা খেকো বিছা পোকা / ম্যাংগো ডি-ফলিয়েটরঃ
এ পোকা পাতার মধ্য শিরাটি অবশিষ্ট রেখে সম্পুর্ণ অংশ খেয়ে ফেলে। আক্রমণ ব্যাপক হলে গাছের কোন পাতা অবশিষ্ট থাকে না। খাদ্যের প্রয়োজনে পোকা এক গাছ হতে অন্য গাছে গমণ করে।

প্রতিকারঃ
১) কীড়া গুলো প্রাথমিক অবস্থায় দলবদ্ধ ভাবে পাতার নিচে অবস্থান করে । এ অবস্থায় এদের সংগ্রহ করে মেরে ফেলতে হবে।
২) কীড়ার গায়ে সুং গুলো পূর্ণতা প্রাপ্তির পূর্বে ডায়েজিনন – ৬০ ইসি, সুনিথিয়ন -৫০ ইসি, লিবাসিড – ৫০ ইসি এর যে কোন একটি প্রতি লিটার জলে ২ মি. লি. হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
৩) ব্যাপক আক্রমণ হলে আগুনে পুড়িয়েও এ পোকা মারা যেতে পারে

অন্যান্য সমস্যা ও প্রতিকার :
আম গাছে এক বছর অনেক ফুল আসে, কিন্তু পরের বছর তেমন আসেনা। এ ধরনের সমস্যা অলটারনেট বেয়ারিং নামে সুপরিচিত। কোন কোন গাছে এক বছর ঠিকমত ফুল ধরে অথচ পরবর্তীতে ২/৩ বছর ঠিকমত ফল ধরেনা। এ ধরনের সমস্যাকে ইরেগুলার বেয়ারিং বলে। এ ধরনের সমস্যার মূল কারন সমন্ধে একেবারে নিশ্চিত হওয়া নাগেলেও বিভিন্ন অবস্থার সঙ্গে সম্পর্ক আছে তাতে সন্দেহ নেই। এগুলো নিন্মরূপঃ

  • ক) জাতের বৈশিষ্ট্যঃ কতগুলো আমের জাত আছে যে গুলোতে মোটামুটি কমবেশী প্রতিবছরই ফল দেয়। এগুলোর মধ্যে হিমসাগর, রানী পসন্দ, খুদীখিরসা অন্যতম। অথচ ল্যাংড়া, বোম্বাই ও খিরসাপাতিতে এ সমস্যা বেশী দেখা যায়।
  • খ) গাছের ও ডালের বয়সঃ ল্যাংড়া জাতের আম গাছ লাগানোর প্রথম ২০ বছর পর্যন্ত প্রা্য় প্রতি বছরই কমবেশী ফল ধরে অথচ বয়স বেড়ে গেলে এ গুন আর থাকেনা। শীতকাল ছাড়া প্রায় সারা বছরই আম গাছে নতুন ডাল গজায়। তবে বসন্তকালে এধরনের নতুন ডাল গজানোর প্রবণতা বেশী। আর এসময় গজানো ডালে সাধারনতঃ ফুল আসে। কেননা নতুন ডালের বয়স ১০ মাস হলে ফুল ধরার উপযোগী হয়।
  • গ) পাতাওয়ালা মুকুলঃ ফজলী জাতের আমে ও আরো কিছু কিছু জাতে নতুন পাতাসহ মুকুল বের হতে দেখা যায়। অথচ অন্য ক্ষেত্রে মুকুলে এ ধরনের কোন পাতা থাকেনা। যে সব গাছে পাতাসহ মুকুল বের হয় সে গাছে প্রতি বছরই মোটামুটি ফল আসে।
  • ঘ) ডালের শর্করা ও নাইট্রোজেনের অনুপাতঃ কোন ডালে মুকুল আসতে হলে শর্করা ও নাইট্রোজেনের পরিমাণ যথেষ্ট থাকতে হবে, তবে শর্করার হার তুলনায় বেশী থাকা উচিত। অথচ এ হার যদি সমান হয় অথবা নাইট্রোজেনেরহার বেশী হয় তবে ডালে মুকুল না এসে পাতা গজাবার সম্ভবনা বেশী থাকে। পাতাওয়ালা মুকুলে পাতাগুলো শর্করা সংগ্রহে সমর্থ হয় বলে পরের বছরেও গাছে মুকুল আসে।
  • ঙ) হরমনের প্রভাবঃ বিজ্ঞানীরা মনে করেন কতগুলো হরমনের প্রভাবে গাছে মুকুল ধরতে সহায়ক হয়। কাজেই এ ধরনের হরমন স্প্রে করার ১০-১৫ দিন পরে গাছে ফুল আসে।
  • চ) আবহাওয়ার প্রভাব ও রোগ- পোকার উপদ্রবঃ গাছে ফুল আসার সময় আবহাওয়া মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন থাকলে পরাগায়নে ব্যাঘাত ঘটে। তার ফলে ফুল ঝরে যায়। তাছাড়া রোগ ও পোকার উপদ্রবে মুকুল আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়।
প্রতিকারঃ ফল না ধরার সমস্যার একক সমাধান না থাকলেও কতগুলো যৌথ ব্যবস্থার মাধ্যমে আম গাছে প্রতি বছর আম ফলানো সম্ভব।
  • ১) যে সব জাতের আম প্রতি বছর ধরে সে জাতের কিছু কিছু আম গাছ বাগানে অবশ্যই লাগানো উচিত।
  • ২) বর্ষার আগে, বর্ষার পরে এবং শীতকালে তিনবার বাগানে চাষ দেওয়া প্রয়োজন।
  • ৩) প্রতি বছরই বর্ষার আগে ও পরে সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। যে বছর গাছে বেশী ফল দেবে সে বছর ফল সংগ্রহ করার পর পরই গাছ প্রতি অতিরিক্ত দেড় কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন, তাতে নতুন পাতা গজাতে সাহায্য করে।
  • ৪) শীতকাল ছাড়া অন্য সময়ে রসের অভাবে গাছ যেন কষ্ট না পায় এজন্য নিয়মিত সেচ দিতে হবে।
  • ৫) রোগ ও পোকামাকড় সময়মত দমন করতে হবে।
  • ৬) গাছের পরগাছা এবং রোগাক্রান্ত হয়ে মরে যাওয়া ডাল অবশ্যই সময় মত ছেটে ফেলতে হবে।
  • ৭) বাগানে মৌমাছি পালন ব্যবস্থা নিলে পরাগায়নে সহায়তা হয়।
  • ৮) গাছ যদি খুব বেশী বাড়ে তবে আগষ্ট- সেপ্টেম্বর মাসে ২ সে: মি: গোল করে কিছু ডালের বাকল উঠিয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া গাছের বয়স অনুপাতে গোড়া কোপিয়ে ৩-৫ কেজি লবণ প্রয়োগ করে জল দিলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।
  • ৯) মশুর দানার মত গাছে ফল ঝরতে দেখা গেলে প্ল্যানফিক্স নামক হরমোন ১০ লিটার পানিতে ২-৩ মি: লি: মিশিয়ে ২-৩ সপ্তাহ পর পর স্প্রে করলে ফল ঝরা বন্ধ হয়।

আম গাছে প্রচুর মুকুল আসলেও ফল না ধরার কারণ ও তার সমাধান
আম গাছে প্রচুর মুকুল দেখা দিলেও আম ধরে না বা খুব কম ধরে, যা একটি গুরুতর সমস্যা। এর অনেক কারণ থাকতে পারে। 

  • প্রথমত: শোষক বা হপার পোকার উপদ্রবের জন্য এটি হতে পারে। ফুল আসার পর পূর্ণাঙ্গ শোষক পোকা ও তার নিম্ফগুলো ফুলের রস টেনে নেয়। ফলে সমস- ফুলগুলো একসময় শুকিয়ে ঝরে যায়। একটি হপার পোকা দৈনিক তার দেহের ওজনের ২০ গুণ পরিমাণ রস শোষণ করে খায় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত আঠালো রস মলদ্বার দিয়ে বের করে দেয়, যা মধুরস নামে পরিচিত। এ মধুরস মুকুলের ফুল ও গাছের পাতায় জমা হতে থাকে যার ওপর এক প্রকার ছত্রাক জন্মায়। 
প্রতিকার হিসাবে আম বাগান সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে বিশেষ করে গাছের ডালপালা যদি খুব ঘন থাকে তবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ছাঁটাই করতে হবে, যাতে গাছের মধ্যে প্রচুর আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে। আমের মুকুল যখন ৮/১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয় তখন একবার এবং আম মটর দানার মতো হলে আর একবার প্রতি লিটার জলে ১ মিলি হারে সাইপারমেথ্রিন অথবা কার্বারিল ২ গ্রাম/লিটার মিশিয়ে সম্পূর্ণ গাছ ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে। আমের হপার পোকার কারণে সুটিমোল্ড রোগের আক্রমণ অনেক সময় ঘটে, তাই সুটিমোল্ড দমনের জন্য প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম হারে সালফার জাতীয় ওষুধ ব্যবহার্য কীটনাশকের সাথে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। 

  • দ্বিতীয়ত: মেঘলা আকাশ ও কুয়াশা থাকার কারণে মুকুলে পাউডারি মিলডিউ রোগ দেখা দেয়। ফলে অতি দ্রুত মুকুলের গায়ে সাদা সাদা পাউডারের মতো দেখা দেয় এবং একপর্যায়ে প্রায় সব মুকুল কালো হয়ে ঝরে যায়। 
সালফারঘটিত ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম ভালভাবে মিশিয়ে স্প্রে করে তা দমন করা যায়। তাছাড়া এ্যানথ্রাকনোজও এ সময় দেখা দেয়। ফলে সমস্যা মুকুল কালো হয়ে ঝরে পড়ে। এক্ষেত্রে ম্যানকোজেব প্রতি লিটার জলে ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। 

  • তৃতীয়ত: গবেষণায় দেখা গেছে, আবহাওয়া, পোকা-মাকড় ও রোগ কোন কারণে এটি ঘটে না। আমের পুষ্পমঞ্জরিতে এক লিঙ্গ ও উভলিঙ্গ ফুল এক সঙ্গে থাকে। ভালো ফলনের জন্য বেশি বেশি উভলিঙ্গ ফুলের দরকার। যে সব গাছে ১০ শতাংশের কম উভলিঙ্গ ফুল থাকে তারা স্বভাবত:ই স্বল্প ফলনশীল জাত। কাজেই ভালো ফলন পেতে হলে এসব জাতের আম চাষ না করাই ভাল। 
  • চতুর্থত: গাছে ফুল ফোটার সময় কুয়াশা, মেঘলা আবহাওয়া বা বৃষ্টি থাকলে ফুলের পরাগ-সংযোগ ব্যাহত হয়। যার ফলে প্রচুর ফুল ফুটলেও সময় মতো পরাগ সংযোগ না হওয়ায় সেগুলো ঝরে যায় বা ফলন হয় না। তাছাড়া অনেক সময় গাছে অস্বাভাবিক পুষ্পমঞ্জরি দেখা যায়। এমন মুকুলে স্ত্রী ফুলের সংখ্যা খুব কম। ফলে কদাচিৎ ফল উৎপন্ন হয় এবং শেষ পর্যন্ত সেটি টিকে থাকে না। মুকুল ক্রমেই শুকিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গাছে থেকে যায়। 
এমন অবস্থায় আক্রান্ত মুকুল গাছ থেকে কেটে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা উচিত। আবার জমিতে ফসফেট, দস্তা ইত্যাদি খাদ্যের অভাব, ফল ধরার পর জমিতে রসের অভাব, ইত্যাদি কারণেও অসময়ে ফুল ও ফল ঝরে যায়। 

  • এ কারণেগুলো নিয়ন্ত্রণ করেও যদি ফল ঝরতে দেখা যায়, তাহলে “প্লানোফিক্স’ ২ মিলি ৪.৫ লিটার জলে মিশিয়ে আম ফলের গুটি মটর দানার মতো হলে একবার আর মার্বেল আকৃতির হলে আর একবার স্প্রে করলে ফল ঝরা বন্ধ হবে।

**** এই গাছ ,সার এবং কীটনাশক কিনতে চাইলে যোগাযোগ করুন SIMPLE PLANT SOLUTION ৮২৯৬৫৯০৬৬৩ নম্বরে *****