ইংরেজিতে Asian pigeonwings, bluebellvine, blue pea, butterfly pea, cordofan pea এবং Darwin pea বলে। ফুলটি গাঢ় নীল রঙের, কিন্তু নিচের দিকটা (এবং ভেতরটা) সাদা, কখনো বা একটু হলদে আভা যুক্ত হয়। সাদা রঙের অপরাজিতাও দেখা যায়। প্রকৃতিতে দুর্লভ প্রজাতির দ্বৈত পাপড়ির (Double Petal) অপরাজিতা ফুল ও দেখতে পাওয়া যায়।
সাদা অপরাজিতা ফুল মহেশ্বেতা নামেও পরিচিত । এটি লতা জাতীয় গাছ, অনেক লম্বা হয়, তবে টব এর ক্ষেত্রে কাটাই ছাঁটাই করেও এই গাছ রাখা যায়। শীতকাল ছাড়া বছরের সবসময়েই এই ফুল ফুটতে দেখা যায়। এই গাছের প্রধান শত্রু বেশি জল। গোঁড়া তে জল বেশি জমলে এই গাছ এর নিশ্চিত মৃত্যু।
অপরাজিতা কেবল শুধু চমৎকার রূপ- সৌন্দর্যেই নয়, এর বৈশিষ্ট্যও অনেক । অপরাজিতা’র রয়েছে বিশেষ ঔষধি গুণাগুণ । ফুল, পাপড়ি, গাছের লতা, মূল বা শিকড় বিভিন্ন রোগের মহৌষধ । ত্বকের রূপচর্চা, চুল পড়া রোধ, হজমশক্তি বৃদ্ধি, জোলাপ বা রেচক (কোষ্ঠকাঠিন্য), মূত্রবর্ধক, বয়ঃসন্ধিকালীন অস্থিরতায় উৎকণ্ঠা ও অবসাদ হ্রাস, মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি, শোথ বা ফুলা, দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা, প্রসবকালীন ব্যাথানাশক, শুষ্ক কাশি, মূর্ছিত হত্তয়া বা জ্ঞান হারানো (Swoon), পাকস্থলীর কার্যকারিতা, চর্মরোগ, গলার ক্ষত (গলগন্ড), আব (Tumor), কান ব্যাথা, সাপ ও পোকামাকড়ের কামড়ে বিশেষভাবে কার্যকরী । নীল অপরাজিতার পাপড়ী দিয়ে তৈরি চা এর স্বাদ অতুলনীয় । এর ক্ষতিকর দিক কম এবং আশঙ্কামুক্ত ।
তাহলে আমরা জেনে নিই কিভাবে এই গাছের পরিচর্যা করতে হবে ।
এই গাছের উপযুক্ত টব নির্বাচন : এই গাছ চার ইঞ্চি গ্রো ব্যাগ এ থাকলে তাকে ৬-৮ ইঞ্চি টবে প্রতিস্থাপন করতে হবে এবং ১-২ বছর পরে ১০-১২ ইঞ্চি টবে প্রতিস্থাপন করতে হবে।
এই গাছের উপযুক্ত মাটি : প্রথমেই খুব সুন্দর ভাবে টবে জল নিকাশি ব্যবস্থা করে নিতে হবে।
সরাসরি জমিতে এই গাছ লাগালে কোনো ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন নেই। কিন্তু টবের ক্ষেত্রে মাটি হতে হবে : ১ ভাগ সাধারণ বাগানের মাটি + ১ ভাগ নদীর সাদা বালি (লাল বালি নয়)+ ১ ভাগ ভার্মি কম্পোস্ট বা এক বছরের পুরনো পচানো গোবর সার বা পাতা পঁচা সার + ১/২ ভাগ কোকোপিট - এই ভাবে মাটি টা ভালোভাবে মিশিয়ে এর সাথে ৬ ইঞ্চি টবের ক্ষেত্রে ১/২ চা চামচ ফসফেট + ১/২ চা চামচ ম্যাগনেশিয়াম সালফেট, ৮ ইঞ্চি টবের ক্ষেত্রে ৩/৪ চা চামচ ফসফেট + ৩/৪ চা চামচ ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে গাছ প্রতিস্থাপন করে সম্পূর্ণ জল দিয়ে দিতে হবে ।
প্রতিস্থাপনের পরবর্তি পদক্ষেপ : যদি এই গাছ লতানো করার ইচ্ছে থাকে তাহলে কিছু করার প্রয়োজন নেই কিন্তু যদি এই গাছ ছোটো রেখে ঘন করার ইচ্ছে থাকে, তাহলে প্রতিস্থাপনের পরে গাছ যতটুকু রাখতে চান সেইটুকু রেখে ওপর থেকে কেটে ফেলতে হবে।
এই ভাবে প্রতিস্থাপনের পর গাছটি ২-৩ দিন হালকা ছায়াতে রেখে তারপর সরাসরি সূর্যালোক এ রাখা যাবে , তবে, হালকা আলোতেও এই গাছ হয়।
এই গাছের জলের ব্যবস্থাপনা : এই গাছের মাটি শুকনো খটখটে হয়ে গেলেও গাছ মরবে না, কিন্তু জলের পরিমাণ বেশি হলেই গাছ মারা যাবে। তাই, এক্ষেত্রে গাছের মাটির ওপরের অংশ শুকিয়ে গেলে তখন জল দিতে হবে, তার আগে না।
এই গাছের খাবারের ব্যবস্থাপনা : প্রত্যেক ১০ দিন অন্তর পাতলা করে সর্ষে খোল এর জল দিতে হবে ,প্রতি সপ্তাহে একবার এন পি কে ১৯-১৯-১৯ স্প্রে করতে হবে , এবং এন পি কে স্প্রে করার ঠিক ৩ দিন পরে ম্যাগনেশিয়াম সালফেট স্প্রে করতে হবে এবং মাসে দুবার মাইক্রোনিউট্রিএন্টস স্প্রে করতে হবে ।
এই গাছের রোগ পোকা এবং তার প্রতিকার : এই গাছে রোগ পোকা খুব একটা হয় না। তবে পাতায় সাদা ফ্যাকাশে দাগ হয়, ডট ডট দাগ পড়ে, এই জন্য প্রতি ৭ দিন অন্তর ফাঙ্গিসাইড স্প্রে করতে হবে ।
অবশ্যই মাইক্রোনিউট্রিএন্টস স্প্রে করতেই হবে এই গাছে মাস এ দুবার।
এর সাথে কাকা, রগড়, সুপার সোনাটা এবং কনফিডোর প্রতি সপ্তাহে একটি করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে স্প্রে করলে এর কোনো রোগ পোকা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
***** এই গাছ ,সার এবং কীটনাশক কিনতে চাইলে যোগাযোগ করুন SIMPLE PLANT SOLUTION ৮২৯৬৫৯০৬৬৩ নম্বরে *****
0 comments:
Post a Comment